Hills, hillocks, marshlands and woods are interwoven with the tourism of Habiganj.
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ভৌগলিক, আর্থ-সামাজিক ইত্যাদি দিক হতে স্বাতন্ত্র্যমন্ডিত এবং অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময়। হবিগঞ্জ জেলাও এই প্রেক্ষাপটে বেশকিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর। হবিগঞ্জ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে অপরূপা নদী, হাওর-বাওর, টিলা ও বিস্তীর্ণ সমতলভূমি, সুদৃশ্য চা-বাগান, রাবার বাগান, প্রাকৃতিক গ্যাস এর প্রাচুর্য প্রাকৃতিক নৈসর্গ ঘেরা বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। জেলা ব্রান্ডিংয়ের মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্য ও সম্ভাবনাসমূহকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিকশিত করা সম্ভবপর হবে।
হবিগঞ্জ জেলার পর্যটক আকর্ষণসমূহঃ
পশুশাইল চাউল :
হবিগঞ্জ জেলা খাদ্যে উদ্বৃত্ত । এ জেলা হাওর অধ্যুষিত হওয়ায় জেলায় মূলত: বোরো ফসলের আবাদ হয়ে থাকে । এ জেলার বিপুল এলাকা জুড়ে এ ফসলের চাষ । জেলার বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা ধান উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে । হবিগঞ্জ জেলায় বানিয়াচং ও লাখাই উপজেলায় ৬.০০ হে: জমিতে ১২ মে: টন পশুশাইল চাউল উৎপাদন হয়। এ চাউলের বৈশিষ্ট হল :
এছাড়া এ জেলার নাগুরা নামক স্থানে উপমহাদেশের প্রথম গভীর পানিতে চাষ উপযোগী ধান উৎপাদনকারী গবেষনা প্রতিষ্ঠান নাগুরা ফার্ম, ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত। এ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উদ্ভাবিত হাইব্রিড জাতের ধানের মধ্যে ব্রি-৫১, ব্রি-৫২, ব্রি-২৯, ব্রি-আর -১৯ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।
খাসিয়া পানঃ
হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল ও চুনারুঘাট উপজেলায় পানির ছড়াকে (পাহাড়ি পানির ছোট ছোট ধারা) কেন্দ্র করে খাসিয়া নৃ-গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের বসবাস। এদের জীবন যাপন বৈচিত্রপূর্ণ। খাসিয়ারা জীবনযাত্রা নির্বাহ করে বিভিন্ন কৃষি কাজ করে। কৃষির উপর নির্ভরশীল এ নৃ-গোষ্ঠী মূলত: পান, সুপারি, বিভিন্ন জাতের মসলা, কমলালেবু চাষাবাদ করে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত করছে। খাসিয়া পুঞ্জিকে কেন্দ্র করে পযটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। খাসিয়া পান পযটকদের আকর্ষনীয় একটি বিষয় হতে পারে । এ উপজেলার পাহাড়ের ছোট ছোট টিলায় খাসিয়ারা বসবাস করে থাকে। টিলার ভাঁজে ভাঁজে খাসিয়ারা উৎপাদন করে এই পান। বাহুবল ও চুনারুঘাট উপজেলায় ১৪.০ হে: জমিতে ৩৫৯৯ কুড়ি পান উৎপন্ন হয়। এ পানের বৈশিষ্ঠসমূহ নিম্নরুপ :
তেলিয়াপাড়া চা বাগানঃ
মহান মুক্তিযুদ্ধে এজেলার ভূমিকা অবিস্মরণীয় । কেননা মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান সেনাপতি মেজর জেনারেল এম এ রব, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী, অন্যতম সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত বীর উত্তম, একুশে পদক প্রাপ্ত ভাষাসৈনিক এনামুল হক মোস্তফা শহীদ ও স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ্ এ এস এম কিবরিয়া এ জেলারই কৃতিসন্তান। এজেলার তেলিয়াপাড়া চাবাগানের ডাক বাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি মেজর জেনারেল আতাউল গনি ওসমানি ০৪ এপ্রিল ১৯৭১ সালে ২য় ও ৪র্থ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারদের নিয়ে প্রাথমিকভাবে সমগ্রদেশকে ০৪ টি সেক্টরে বিভাজন করেন, যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের কৌশলগত পরিচালনায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
প্রাকৃতিক সম্পদের আধারঃ
দেশের বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র , রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্র এবং হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ড থেকে প্রতিদিন মোট ১৫৩৪ মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগান দেয়া হচ্ছে, যা দেশের দৈনিক চাহিদার অর্ধেকের চেয়ে বেশী । শুধু বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড থেকে প্রায় ৪৫% গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে । বিদ্যুৎ উৎপাদনেও এ জেলার রয়েছে অনন্য ভূমিকা । হবিগঞ্জ জেলায় বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৮৭৭ মেগাওয়াট।
দ্রুত ক্রমবর্ধমান শিল্পনগরীঃ
প্রাকৃতিক গ্যাস , বিদ্যুৎ ও সাদাবালি, সিলিকা বালির প্রাচুর্যতা থাকায় এজেলায় দ্রুত নগরায়নের পাশাপাশি সরকারী উদ্যোগে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রক্রিয়াধীন। প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ এর প্রাচুর্যের কারণে হবিগঞ্জ জেলায় স্কয়ার গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপ,যমুনা গ্রুপ, আর এ কে এবং স্টার সিরামিক এর মত বড় বড় কোম্পানী শিল্পকারখানা স্থাপন করেছে।
রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্য :
পর্যটনে হবিগঞ্জের ভূমিকা অন্যতম । নদী, হাওড়-বাওড়, চা-বাগান, ছোটবড় টিলা ও রিসোর্ট প্যালেসসহ ছোট বড় অনেকগুলি রিসোর্ট এ জেলায় পর্যটন প্রেমীদের মোহিত ও আকর্ষণ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দযের অপূর্ব লীলাভূমি স্বপ্নীল সবুজ শ্যামলিমা সম্বৃদ্ধ ২৪ টি চা বাগান , যা প্রকৃতি প্রেমীকে বিমোহিত করে। এ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার ২৪৩ হেক্টর ভূমিতে রয়েছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও প্রায় ৬০০০ হেক্টর আয়তনের রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যটি বিরল প্রজাতির পশু পাখিদের বিচরণ ভূমি । সীমান্তবর্তী রেমা কালেঙ্গা টাওয়ার থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও বনের দৃশ্য উপভোগ করা যায় । এ বনভূমির আয়তন ৬,০২২ হেক্টর, এ বনে ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা, সতের প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, ১৮ প্রজাতির সাপ, ১৬৭ জাতের পাখি, ৩৭ জাতের স্তন্যপায়ী প্রাণী ও বিলুপ্ত প্রায় শকুন প্রজাতি রয়েছে ।
রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য:
পটভূমি : হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা সদর হতে আনুমিক ১৩.০০ কিঃ মিঃ পূর্ব-দক্ষিণে কালেঙ্গা রেঞ্জের অবস্থান । কালেঙ্গা রেঞ্জের মোট আয়তন ৬০২২.২৫ হেক্টর এর মধ্যে বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ১৭৯৫.৫৪ হেক্টর। কালেঙ্গা রেঞ্জে ০১ জন রেঞ্জ কর্মকর্তা, বিট কর্মকর্তা হিসেবে ০৪ বিটে ০৪ জন ফরেষ্টার ও ২৬ জন বন কর্মী( বন প্রহরী, বাগান মালী, নৌকা চালক, ওয়াচার) কর্মরত রয়েছে ।
বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের অবস্থান ও গঠন :
রেমা কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যটি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার অন্তর্গত গাজীপুর ও রাণীগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত । অভয়ারণ্যটি ২৪-০৬ হতে ২৪-১৪ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১-৩৬ হতে ৯১-৩৯ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত । এই অভয়ারণ্যটির দক্ষিণ পশ্চিম দিকে রেমা চা বাগান , পূর্ব দক্ষিণ দিকে ভারতীয় ত্রিপুরা রাজ্য এবং উত্তর ও পশ্চিম দিকে তরফ পাহাড় সংরক্ষিত বন অবস্থিত । এটি মূলতঃ তরফ পাহাড় সংরক্ষিত বনের অংশ । অভয়ারণ্যটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ( সংরক্ষণ/ সংশোধন ) আইন অনুসারে ১৯৮২ সালে ১০৯৫.০০ হেক্টর এলাকাকে নিয়ে প্রথমেই প্রতিষ্ঠা করা হয় । পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে একে সম্প্রাসরণ করে ১৭৯৫.৫৪ হেক্টর করা হয় । (ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি নং-পরম(শা-৩)৭/৯৬/৩৭১ তারিখ ০৭/০৭/১৯৬ ইং) অভয়ারণ্য।
তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত :
অভয়ারণ্যের তাপমাত্রা সাধারণত: উষ্ণ ও আদ্র, তবে শীতকালে তাপমাত্রা খুব ঠান্ডা থাকে । সাধারণত জানুয়ারি মাসে তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৯ ডিগ্রি এবং জুন মাসে থাকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস । আপেক্ষিক আদ্রতা মার্চ মাসে ৭৪ % এবং জুন মাসে ৮৯% । বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৪০০০ এমএম প্রায় ।
জীব বৈচিত্র :
ক) উদ্ভিদকুলঃ
রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ১৭৯৫.৫৪ হেক্টর বনভূমির মধ্যে ১৫৯২.৫৪ হেক্টর High Canopy Forest , ৮৫ হেক্টর Law Canopy forest এবং ১১৮ হেক্টর কৃষি জমি ও প্রাকৃতিক ছড়া রয়েছে। বর্তমানে অভয়ারণ্যের ভিতর প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছপালার পরিমান ৯১% এবং রোপিত গাছপালার পরিমান প্রায় ৯% । অভয়ারণ্যে ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা ও লতাপাতার আবাসস্থল রয়েছে। জীববৈচিত্রপূর্ণ এ প্রাকৃতিক বনে চিরহরিৎ,পর্ণমোচি, বাঁশ ও গুল্মলতা ইত্যাদি বিভিন্ন স্তরের গাছ মিশ্র অবস্থায় রয়েছে । উপরের স্তরের গাছের মধ্যে অন্যতম হলো Artocarpus chaplasha, Dipterocarpus, turbinatus, Elaeocarpus, floribundaas, Dillenia pentagyna, Castanopusis tribuloides, etc. সর্ব প্রজাতির মধ্যে রয়েছে Adhatoda zeylanica, Carea arborea and others এবং বাঁশ প্রজাতির মধ্যে রয়েছে Bambusa tulda,Bambusa polymorpha,Bambusa longispiculata এবং ঘাস প্রজাতির মধ্যে অন্যতম হলো Sacacharum,Daemonorope,Thysanolaena ইত্যাদি প্রজাতি । এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর ফল ও পশুখাদ্য উপযোগী এবং স্থানীয় প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে, এদের মধ্যে আওয়াল, কাকরা, নেউর, হারগাজা,গন্ধরাই, হরিতকি, ,বহেরা, জাম, ডুমুর, জারুল, কাউ, কদম, রাতা, গামার, বনাক চিকরাশি, গর্জন, চাপালিশ, নিম, সিভিট, শিমুল, কড়ই প্রভূতি উল্লেখযোগ্য বৃক্ষ দ্বারা এ প্রাকৃতিক বন সমৃদ্ধ।
খ) প্রাণীকুল :
অভয়ারণ্য ৭ প্রজাতির উভচর, ১৮ প্রজাতির্ সরীসৃপ, ১৬৭ প্রজাতির পাখি, যেমন- ভিমরাজ, পাহাড়ী ময়না, কাও ধনেশ, বনমোরগ/মুরগী, লালমাথা ট্রগন, ফেটা কন্টী ,সাতভায়লা, টিয়া, ঘুঘু, শ্যামা ইত্যাদি এবং ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। বন্যপ্রাণীর মধ্যে বেজি, বড় কাঠবিড়ালি, বন শুকর, বানর, চশমা পড়া হনুমান, মায়া হরিণ, গন্ধগোকুল, মেছোবাঘ, চিতাবাঘ,মুখপোড়া হনুমান, লজ্জাবতী বানর উল্লেখযোগ্য । ইদানিং বনের বিভিন্ন স্থানে মেছোবাঘ ও চিতাবাঘের বংশ বিস্তারের নমুনা হিসেবে বাঘের বাচ্চা বনকর্মী ও গ্রামবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন । এছাড়া বনে Greater Racket tailed Drongo,Oriental Pied Hornbill,Puff throated,Babbler,White rumped Shama, Red headed Trongo, Hill Myna, Red Jungled Fowl পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা অভয়ারণ্যের সার্বিক জীব বৈচিত্র উন্নতির নির্দেশক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে । অভয়ারণ্যের কি স্টোন প্রজাতি হচ্ছে Capped langurs and Macaques.
বাংলাদেশে ২ টি শকুনের নিরাপদ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে । এর একটি হলো বৃহত্তর সিলেট বিভাগ এবং অন্যটি সুন্দরবন এলাকা । সিলেট বিভাগ এবং ঢাকা ও চট্রগ্রাম বিভাগের কিছু অংশ নিয়ে ডিসেম্বর ২০১৪ সালে ১৯,৬৬৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা ঘোষনা করা হয়েছে,যা রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত । এ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের আওতাধীন রেমা বিটের ময়নাবিল ক্যাম্পের বনাঞ্চলে প্রায় ১০০ টি শকুনের আবাসস্থল রয়েছে এবং তন্মধ্যে ১৬ টি শকুন বর্তমান বছরে ডিম পেড়েছে। আইইউসিএন (IEUCN) ২০১২ সন হতে শকুন সংরক্ষনের নিমিত্ত কাজ করে যাচ্ছে এবং শকুন সংরক্ষনের জন্য স্থানীয় বিট কর্মকর্তাকে আহবায়ক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে ।
চারটি আদিবাসী সম্প্রদায় যেমন ত্রিপুরা, সাঁওতাল, তেলেগু এবং উড়াং এই অভয়ারণ্যের ভিতর ও আশপাশে বসবাস করে । এদের বৈচিত্র্র্যময় সংস্কৃতি যে কোন পযটককে আকৃষ্ট করে ।
রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে যা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত । এ অভয়ারণ্যে হেক্টর প্রতি প্রাকৃতিক সিডলিং রয়েছে ১০৩৩৯টি, প্রাকৃতিক সেপলিং রয়েছে ২৮৬৮টি, প্রাকৃতিক গাছ রয়েছে ১৪১৯টি, যা অন্য বনের তুলনায় অনেক ভাল । এ অভয়ারণ্যে হেক্টর প্রতি কার্বন স্টকের পরিমাণ ৩৭০.৭ Mg/ha, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ( সূত্র : Forest Carbon Inventory 2014 at Eight Protected Areas in Bangladesh) ।
পযটকদের অভয়ারণ্যে যাতায়াত ব্যবস্থা ও সুযোগ সুবিধা সমূহ :
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা সদর হতে সিএনজি অটোরিকসা/মোটর সাইকেল যোগে বড়জুম বাজার হয়ে অভয়ারণ্যে গমন করা যায় এবং শুষ্ক মৌসুমে শ্রীমঙ্গল-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের লছনা স্থান হতে মোটরযানযোগে হুগলি চা বাগান হয়ে অভয়ারণ্যে গমন করা যায় । অভয়ারণ্যে বন বিভাগ কর্তৃক ৩ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বন বিশ্রামাগার রয়েছে । এ ছাড়াও পযটকদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকল্পে ২ কক্ষ বিশিষ্ট নতুন ১ টি ইকো-কটেজ, ১টি ক্যান্টিন ও ওয়াশ রুম, ১টি পিকনিক স্পট ও রেষ্ট রুম, ১টি গোল ঘর, ২টি ছাতা এবং ৭টি আরসিসি বেঞ্চ গত আর্থিক সনে নির্মাণ করা হয়েছে । কালেঙ্গা রেঞ্জ অফিসের নিকটে ব্যক্তি-উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ইকো-কটেজে রাত্রি যাপনের সুবিধা রয়েছে । দুই কক্ষ বিশিষ্ট এ কটেজে ভাড়ার বিনিময়ে এক সাথে ৪ জনের রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে ।
অভয়ারণ্যের প্রাকৃতিক বন ও বন্যপ্রাণী উপভোগের জন্য ৩টি পায়ে হাটার পথ আছে যা প্রকৃতিপ্রেমী এবং ট্যুরিষ্টদের আকৃষ্ট করতে ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে ।
(১) আধা ঘন্টার পথ ( ২) এক ঘন্টার পথ এবং (৩) তিন ঘন্টার পথ । প্রতিটি ট্রেইলে ( পথে) রয়েছে বিভিন্ন বিরল বন্যপ্রাণী বিশেষ করে পাখি দর্শনের সুযোগ ।
দর্শনার্থী হতে আয় :
০১ জুন ২০১৩ হতে ৩০ জুন ২০১৫ পযন্ত মোট ১১৪৮ জন দর্শনার্থী হতে ২০,৫৭০.০০ টাকা আয় হয়েছে ।
সমস্যাদি :
সমস্যা সমাধানে করণীয় :
ঐতিহাসিক সাগর দিঘিঃ
প্রায় দ্বাদশ শতাব্দিতে রাজা পদ্মনাভ প্রজাদের জলকষ্ট নিবারণের জন্য বানিয়াচং গ্রামের মধ্য ভাগে এ দিঘিটি খনন করেন। এ দিঘি খননের পর পানি না উঠায় স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে রাজা পদ্মনাভের স্ত্রী রাণী কমলাবতী এ দিঘিতে আত্ম বিসর্জন দেন বলে একটি উপাখ্যান এ অঞ্চলে প্রচলিত আছে। এ জন্য এ দিঘিকে কমলা রাণীর দিঘিও বলা হয়ে থাকে। এ দিঘি নিয়ে বাংলা সিনেমাসহ রেডিও মঞ্চ নাটক রচিত হয়েছে। এর পাড়ে বসে পল্লী কবি জসিম উদ্দিন ‘রাণী কমলাবতীর দিঘি’ নামে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন। সে কবিতাটি তাঁর ‘সূচয়নী’ কাব্য গ্রন্থে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ দিঘিটি বাংলা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিঘি বলে খ্যাতি রয়েছে। ১৯৮৬ সালে দিঘিটি পুনঃ খনন করান ঐ গ্রামেরই সুনামধন্য তৎকালীন মৎস্য ও পশুপালন মন্ত্রী সিরাজুল হোসেন খাঁন। বর্তমানে ৬৬.০০ একর জায়গা নিয়ে দিঘিটি বিস্তৃত। তম্মধ্যে জল সীমানা রয়েছে ৪০.০০ একর এবং চার পাড় মিলে রয়েছে ২৬.০০ একর। ঐ চার পাড়ে দিনাজপুরের রামসাগরের আদলে পর্যটন পার্ক তৈরী করা হলে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে অনেক পর্যটকই মতামত রেখে থাকেন। বর্তমানে এ দিঘিটি সরকার মৎস্য চাষের আওতায় এনে লিজ দিয়ে বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আয় করছে।
বিথঙ্গল রামকৃষ্ণ জিউর আখড়াঃ
বনিয়াচং উপজেলায় অবস্থিত বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান বিথঙ্গল আখড়া। বানিয়াচং সদর উপজেলা হতে ১২ কি:মি: দক্ষিণ-পশ্চিম হাওড় পাড়ের বিথঙ্গল গ্রামে অবস্থিত এ আখড়াটি । এর প্রতিষ্ঠাতা রামকৃষ্ণ গোস্বামী। তিনি উপমহাদেশের বিভিন্ন তীর্থ স্থান সফর শেষে ষোড়শ শতাব্দীতে ঐস্তানে আখড়াটি প্রতিষ্ঠা করেন। এতে ১২০ জন বৈষ্ণবের জন্য ১২০ টি কক্ষ রয়েছে । এই আখড়ায় বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় উৎসব পালিত হয়।
হাওরাঞ্চলের বিপুল মৎস্য সম্পদঃ
এ জেলায় রয়েছে বিপুল জলরাশি। এ বিপুল জলরাশিতে রয়েছে মাছের অভয়াশ্রম। বর্ষাকালে এ অভয়াশ্রম বিপুল মাছে পরিপুর্ণ হয়ে উঠে। যা জেলার প্রোটিন চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে যায় জেলার বাহিরে বিভিন্ন জায়গায় ।এ জেলায় রয়েছে অনেকগুলি বিল-ঝিল । ঐ বিলগুলি জলমহাল হিসেবে ইজারা দিয়ে সরকার আয় করে বিপুল অংকের অর্থ যা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে । বিভিন্ন প্রকারের দেশীয় মাছ ঐ সমস্ত বিলে পাওয়া যায় যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়ে থাকে ।
প্রকৃতির উপমা সবুজে ঘেরা চা-বাগান :
এ জেলার শাহজিবাজারে অবস্থিত হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ডের অভ্যন্তরে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রায় ৫ একর ভূমির উপর অবস্থিত “ফ্রুটস ভ্যালি”নামক একটি উদ্যান যেখানে রয়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির উদ্ভিদের সমাহার ও একটি মনোরম বিশ্রামাগার। এছাড়াও রয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশে পালিত বিভিন্ন প্রজাতির মোরগ, ময়ূর, পাখি, বিলেতি ইঁদুর যা বাগানে বনের আবহ সৃষ্টি করে রেখেছে। কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্টি ঝর্ণা, টিপটপ রেষ্টহাউজ, সুসজ্জিত লন থেকে দৃশ্য মান দূর পাহাড়ের গায়ে হেলে পড়া আকাশ এসব ক্ষণিকের জন্য হলেও দর্শনার্থীদের নিয়ে যেতে পারে যান্ত্রিক জগত থেকে বহু দূরের কোনো স্বপ্নরাজ্যে ।
বানিয়াচঙ্গের লক্ষ্মীবাউর জলাবন:
বাংলাদেশের আরেক বৃহত্তম সোয়াম্প ফরেস্ট বানিয়াচঙ্গের লক্ষ্মীবাউর জলাবন । এবনে রয়েছে মেছোবাঘ, শিয়াল, লাড্ডুকা, কেউটে, গুইসাপ, গুখড়া, দারাইশ সহ নানা প্রজাতির বিষধর সাপ । বর্ষায় ঢেউহীন স্বচ্ছজলের সঙ্গে মিতালি গড়ে ওঠে বাহারি প্রজাতির বৃক্ষলতার। হেমন্তে দৃশ্যমান হয় ছোট ছোট পাহাড়ের ন্যায় বনভূমির । শীতে দেশী-বিদেশী পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় নির্জন এই জলাবন । সিলেটের রাতারগুলের মতোই বানিয়াচঙ্গের লক্ষ্মীবাওর জলাবন । তবে লক্ষ্মীবাউর জলাবনের আকার ও আয়তনের ব্যাপ্তি অনেক বড়। এর দক্ষিণ দিকে লোহাচুড়া, উত্তরে খড়তি আর পশ্চিমে নলাই নদী । তার পূর্বপাশে আবার রয়েছে গঙ্গাজলের হাওর। লক্ষ্মীবাউর জলাবনের চূড়া আয়তন সাড়ে ৩ কিলোমিটার । দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ প্রায় সমান ।
জেলা ব্র্যান্ডিং এর উদ্দেশ্য :
খাসিয়া পান ও পশুশাইল চাউল এবং রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যকে জেলা ব্র্যান্ডিং এর বিষয় হিসেবে নির্বাচনের যৌক্তিকতা (জেলাসমূহ তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরবে) :
হবিগঞ্জ জেলা নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এ জেলার যেমন একদিকে রয়েছে ছোট ছোট পাহাড় তেমনি রয়েছে সুবিশাল জলরাশি। পাহাড়ের গায়ে বসবাস করে খাসিয়া জনগোষ্ঠী। তাদের বসতবাড়ির পাশেই তৈরি করে পানের ছোট ছোট বরজ। দেশের উৎপাদিত পানের মধ্যে বিদেশে রপ্তানী যোগ্য পান একমাত্র খাসিয়া। যা সহজে পচন ধরেনা এবং খেতেও আলাদা স্বাদ। হবিগঞ্জ জেলায় রয়েছে খাসিয়া পানের শতাধিক পুঞ্জি। জেলার উৎপাদিত পান বিদেশে রপ্তানীর মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। উপজাতি খাসিয়া সম্প্রদায়ের একমাত্র আদিপেশা পান চাষ। গহীন অরণ্যে বড় বড় গাছে পান চাষ করে থাকে তারা। পতিত বনভূমিকে লীজ এনে পান চাষের উপযোগী করা হয়। ক্রেতারা পান ক্রয় করে ট্রাক বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। তাছাড়া বিদেশে রপ্তানীর জন্য পান ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। খাসিয়াদের কঠোর শ্রমে খাসিয়া পান চাষ করা হলেও খাসিয়া সম্প্রদায়ের ভাগ্যের তেমন কোন উন্নয়ন করা হয়নি। অধিকাংশ পুঞ্জিতে রয়েছে হাজারো সমস্যা। পৃষ্টপোষকতার অভাব ছাড়াও জমি লীজ নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা।রেমা কালেঙ্গা বনভূমির আয়তন প্রায় ৬০২২ হেক্টর। এই অভয়ারণ্যটি বিরল প্রজাতির পশুপাখিদের বিচরণ ভূমি এবং সীমান্তবর্তী রেমা কালেঙ্গা টাওয়ার থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও বনের দৃশ্য উপভোগ করা যায় । এখানে ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা, ১৭ প্রজাতির উভচর প্রাণীর মেলা, ১৮ প্রজাতির সাপ, ১৬৭ জাতের পাখি, ৩৭ জাতের স্তন্যপায়ী প্রাণী আরো আছে বিলুপ্তপ্রায় শকুন প্রজাতি।
লোগো ও ট্যাগলাইনঃ
জেলার পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থাঃ হবিগঞ্জ জেলায় বর্তমানে পর্যটকের আগমন ঘটে চা বাগান ও বিভিন্ন রিসোর্টকে কেন্দ্র করে। চা বাগানের নিজস্ব রেষ্ট হাউজেই আবাসন ব্যাবস্থা বিদ্যমান। এছাড়া অন্যান্য উপজেলায় থাকার তেমন সুব্যবস্থা নাই। জেলার অধিকাংশ লোকজন ধান উৎপাদন এর সাথে জরিত।হাওর এলাকা হওয়ায় উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন নৌকা। এটিকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশ সম্ভব।এর সাথেও এ জেলার মাধবপুরে ও শায়েস্তাগঞ্জে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্প কারখানা। এর ফলে জেলার সাথে অন্য জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার অভুতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে।
যোগাযোগ,থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থাঃ
হবিগঞ্জ জেলাটি ঢাকার অত্যন্ত কাছে এবং রাস্তাঘাট বেশ উন্নত। দেশের যেকোন জায়গা থেকে সহজে যোগাযোগ করা সম্ভব। বাস এবং ট্রেনযোগে অত্যন্ত অল্প সময়ে হবিগঞ্জ পৌছা সম্ভব। এখানে রয়েছে দ্যা প্যালেসের মত আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট, হাইওয়ে ইন, বাঁশপাতা, নূরজাহান, পানসী, আল আমীন, এছাড়াও জেলার প্রত্যেকটি চা-বাগানে রাত্রি যাপনের সুব্যবস্থা এবং উন্নতমানের খাওয়ার ব্যবস্থাসহ যেকোন মানের আপ্যায়ন ব্যবস্থা।
পর্যটন শিল্পের শক্তি,দুর্বলতা, সুযোগ ও ঝুঁকি বিশ্লেষণঃ
সার্বিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সুবিধার্থে হবিগঞ্জ জেলার পর্যটন শিল্পের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও ঝুঁকিসমূহ বিশ্লেষণ করা হয়েছেঃ
শক্তিঃ
সহজে উৎপাদনশীলঃ
বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে পান ও চাউল এ জেলার আবহাওয়া ও জলবায়ুর কারনে সহজে উৎপাদন হয়।
ব্যাপক চাহিদাঃ
আবহমান বাংলার জনগন তাদের কাজের পাশাপাশি পান খেয়ে অবসর সময় কাটায়। আর চাউল আমাদের বাঙ্গালীর জীবনের অপরিহার্য খাদ্য ।
কম পূঁজিতে উৎপাদনঃ
পান উৎপাদন করতে খাসিয়া জনগোষ্টীর স্বল্প পূঁজি লাগে।
শ্রমিকের সহজ প্রাপ্যতাঃ
খাসিয়া পান ও চাউল উৎপাদনে এ অঞ্চলে শ্রমিকের সহজ-লভ্যতা রয়েছে।
দুর্বল দিকঃ
১। ন্যায্য মজুরির অভাব
২। ন্যায্য মূল্যের অভাব
৩। অনুন্নত পরিবহন ব্যবস্থা
৪। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব
৫। সমন্বয়ের অভাব
৬। গুনগত মানের অভাব
৭। অনুন্নত সংরক্ষন ব্যবস্থা
৮। তদারকির অভাব
৯। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা
১০। পানীয় জলের সীমাবদ্ধতা
সম্ভাবনাঃ
১। কর্মসংস্থান সৃষ্টি
২। দেশে বাজার সৃষ্টি
৩।বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা
৪। দেশের ঘাটতি চাহিদা মেটানো
ঝুকিঃ
১। পচনশীলতা
২। মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ব
৩। পরিবেশ দূষণ
৪। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
জেলা ব্যান্ডিং বাস্তবায়ন কর্মপরিকল্পনাঃ
৩ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা অনুসরন করা হবেঃ
হবিগঞ্জ জেলা ব্র্যান্ডিং কর্ম-পরিকল্পনা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপরূপা নদী, হাওর-বাওড়, টিলা ও বিস্তীর্ণ সমতল ভূমি, সুদৃশ্য চা-বাগান,রাবার বাগান, প্রাকৃতিক গ্যাস এর প্রাচুর্য প্রাকৃতিক নৈসর্গ ঘেরা বহুমাত্রিক বৈশিষ্টের অধিকারী । ধর্মীয় ও মুক্তিযুদ্ধের ভাবগাম্ভীর্যের নীরিখে হবিগঞ্জ একটি অত্যন্ত পবিত্র স্থান। সুফী সাধক হযরত শাহজালাল (রঃ) এর অনুসারী সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন (রঃ)এর পুণ্যস্মৃতি বিজড়িত খোয়াই, করাঙ্গী, সুতাং, বিজনা প্রভৃতি নদী বিধৌত হবিগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক জনপদের নাম। এশিয়ার বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং এখানে অবস্থিত,যেখানে রয়েছে ষোড়শ শতকের বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান বিথঙ্গল আখড়া এবং হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় উচাইল মসজিদ নামে একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে । এজেলায় আরও রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎ, সাদাবালি-সিলিকা-বালির আধিক্যতা। রয়েছে ২৪টি চাবাগান, ২৪৩ হেক্টর ভূমিতে রয়েছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং প্রায় ৬,০২২ হেক্টর আয়তনের রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যটি বিরল প্রজাতির পশুপাখিদের অবাধ বিচরণ ভূমি । এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাকে পর্যটনে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে । বিশেষ একটি বিষয়ের ব্র্যান্ডিং করার মাধ্যমে দেশে বিদেশে পরিচিত করার লক্ষ্যে হবিগঞ্জ জেলাকে বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন জেলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জেলা-ব্র্যান্ডিংএর জন্য এ জেলার রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যকে নির্বাচন করা হয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস